লর্ড ওয়েলেসলী ১৭৯৮ খ্রিস্টাব্দে অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি নামে এক সাম্রাজ্যবাদী নীতি প্রবর্তন করেন।
নীতি সমূহ:-
১) যে রাজ্য এই নীতি গ্রহণ করবে, ইংরেজরা সেই রাজ্যকে বহিঃশত্রু ও অভ্যন্তরীণ বিপদ থেকে রক্ষা করবে।
২) তবে ওই রাজ্যকে একদল ইংরেজ সৈন্য রাখতে হবে।
৩) সেনাদলের ব্যয় নির্বাহের জন্য নগদ টাকা অথবা রাজ্যের একাংশ ছেড়ে দিতে হবে।
৪) ওই রাজ্য কোম্পানীর বিনা অনুমতিতে অন্য কোনো শক্তির সাথে মিত্র বা যুদ্ধ করতে পারবে না।
৫) ওই রাজ্যের দরবারে একদল ইংরেজ প্রতিনিধি থাকবেন।
৬) ইংরেজ ছাড়া সব ইউরোপীয় কে ওই রাজ্য থেকে বিতাড়িত করতে হবে।
নীতি গ্রহণ :-
দেশীয় রাজ্য গুলোর মধ্যে ১৭৯৮ খ্রিস্টাব্দে দুর্বলচিত্ত, ভীরু হায়দ্রাবাদের নিজাম সর্বপ্রথম এই দাসত্বের চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন। এরপর একে একে সুরাট (১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে ), তাঞ্জোর (১৮০০ খ্রিস্টাব্দে), কর্ণাটক (১৮০১ খ্রিস্টাব্দে) প্রভৃতি রাজ্য এই সন্ধি পত্রে স্বাক্ষর করেন।
১৮১৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে১৮২৩ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বহু রাজপুত রাজ্য এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।ক্রমে এভাবে ভারতের এক বিস্তৃত অঞ্চল কোম্পানীর শাসনের অধীনে চলে যায়।
মন্তব্য:-
প্রকৃতপক্ষে ওয়েলেসলীর এ চুক্তি ছিল এক ধরনের ফাঁদ যে এই ফাঁদে পড়েছে সেই রাজ্যের স্বাধীনতা বিসর্জন হয়েছে। স্যার টমাস মনরো বলেন যে, যেখানেই অধীনতামূলক মিত্রতা ব্যবস্থা প্রবর্তিত হচ্ছে সেখানেই শ্রীহীন পল্লীগ্রাম এবং ক্রমহ্রাসমান জনসংখ্যা তার চিহ্ন বহন করছে।
তবে এ চুক্তি ইংরেজদের দিক থেকে খুবই সুবিধাজনক ছিল। এর দারা কোম্পানীর শক্তি ও সম্পদ যথেষ্ট বৃদ্ধি পায় এবং তাদের পক্ষে সার্বভৌম শক্তিতে পরিণত হওয়া সম্ভব হয়।
0 Comments