পটভূমি:-
১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সনদ আইনে ৪৩ নং ধারায় ভারতের শিক্ষা খাতে এক লক্ষ টাকা ব্যয় করার কথা ঘোষণা করা হয়।১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে গঠিত "শিক্ষা সভা” কে (G.C.P.I-general committee of public instruction) ভারতীয় শিক্ষার উন্নয়নের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়। এই এক লক্ষ টাকা প্রাচ্য না পাশ্চাত্য শিক্ষা খাতে ব্যয় হবে তা নিয়ে সদস্যদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়।
শিক্ষা সভার সভাপতি নিয়োগ:-
এই পরিস্থিতিতে তৎকালীন গভর্নর জেনারেল লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক তাঁরা আইনসচিব মেকলে কে "পাবলিক ইন্সট্রাকশন কমিটির” সভাপতি নিযুক্ত করেন। মেকলে বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে ২রা ফেব্রুয়ারি পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের জন্য সরকারের কাছে একটি প্রতিবেদন পেশ করেন।
এই প্রতিবেদনে ভারতীয়দের মধ্যে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের জন্য মেকলে যে যুক্তি দেন, তা-ই ফিল্ট্রেশন থেওরি বা চুঁইয়ে পড়া নীতি বা পরিস্রাবণ পদ্ধতি নামে পরিচিত।
ফিল্ট্রেশন থেওরি:-
মাতৃভাষার মাধ্যমে স্কুল চালাতে গেলে সরকারের খরচ অনেক বেড়ে যাবে; সুতরাং কিছু লোক যদি ইংরেজি মাধ্যমের পাশ্চাত্য শিক্ষা লাভ করতে পারে তাহলে আশা করা যায় যে, তাদের সংযোগে জনসাধারণের মধ্যে পাশ্চাত্য শিক্ষা ছড়িয়ে পড়বে।অর্থাৎ মুষ্টিমেয় কয়েকজন পাশ্চাত্য শিক্ষিত ব্যক্তির মধ্য দিয়ে পরিশ্রুত হয়ে ইংরেজি শিক্ষা
জনগণের মধ্যে স্রোতস্বিনীর আকার নেবে। মেকলের এই যুক্তিকে বলা হত- "Filtration theory” বা "পরিস্রাবণ পদ্ধতি” বা "চুঁইয়ে পড়া নীতি।”
ফলাফল:-
মেকলে ঢেয়ে ছিলেন এমন একটি শিক্ষিত সম্প্রদায় গড়ে তুলতে, যা রক্ত ও বর্ণের দিক থেকে ভারতীয় হলেও রুচি, মতাদর্শ, নীতি ও বুদ্ধির দিক থেকে খাঁটি ইংরেজ হবে। চুঁইয়ে পড়া নীতির ফলে তাঁর এই উদ্দেশ্যে সফল হয়েছিল।
0 Comments