পটভূমি:-
১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে লখনৌ চুক্তি অনুসারে মুসলমান সম্প্রদায়ের যেসব দাবি কংগ্রেস স্বীকার করেছিল তা "নেহেরু রিপোর্ট" লঙ্ঘিত হয়। তাছাড়া মহম্মদ আলী জিন্নাহ মুসলিম লীগের সভাপতি হিসেবে চেয়েছিলেন মুসলমানদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র। এই লক্ষ্য পূরণের উদ্দেশ্যে ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে ২৮ শে মার্চ দিল্লিতে অনুষ্ঠিত সর্বভারতীয় মুসলিম কনফারেন্সে তাঁর বিখ্যাত "চৌদ্দ দফা দাবি" শেষ করেন।
দাবি সমূহ:-
জিন্নার চৌদ্দ দফা দাবিগুলি ছিল-
১) কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মন্ত্রিসভায় এক-তৃতীয়াংশ মুসলিম সদস্য গ্রহণ।
২) ভারতবর্ষে যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন।
৩) সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতির প্রয়োগ।
৪) প্রতিটি আইনসভার মুসলমান প্রতিনিধিদের নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ দান।
৫) যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রদেশ গুলিতে সমান অধিকার দান।
৬) ভারতীয় প্রদেশ গুলির পুনর্গঠন।
৭) প্রতিটি সম্প্রদায়কে তাদের ধর্ম পালনের স্বাধীনতা দান।
৮) কেন্দ্রীয় আইন সভাতে মুসলিমদের জন্য এক-তৃতীয়াংশ আসন সংরক্ষণ।
৯) সিন্ধু অঞ্চলকে আলাদা প্রদেশ রূপে স্বীকৃতি দান।
১০) আইনসভায় যে কোন সম্প্রদায়ের চার ভাগের এক ভাগ বিরোধিতা করলে কোন বিল বাতিল করা।
১১)প্রাদেশিক আইনসভায় অনুমতি ছাড়া সংবিধান পরিবর্তন না করা।
১২) রাজ্য ও স্থানীয় সংস্থা গুলিতে মুসলিমদের জন্য যথোপযুক্ত পদ সংরক্ষন।
১৩) বেলুচিস্থান ও উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ অঞ্চলে সাংবিধানিক সংস্কার।
১৪) মুসলিম সাহিত্য শিক্ষা সংস্কৃতির সংরক্ষণ।
মন্তব্য:-
নেহেরু কমিটি সংবিধানের যে খসড়া প্রস্তাব দিয়েছিল তা বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলই মেনে নিতে পারেনি। বিশেষত মুসলিমরা সরাসরি এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিল। আবার জিন্নাহর "চৌদ্দ দফা দাবি" জাতীয় কংগ্রেস মেনে নিতে পারেনি। তাই "আবুল কালাম আজাদ” বলেছিলেন,- "মুসলমানরা রক্ষাকবচের দাবি করে ভুল করে এবং হিন্দুরা তাদের দাবি নস্যাৎ করে দিয়ে আরও বড় ভুল করে "(The Muslims were fools to ask for safeguards and the Hindus were greater fools to refuse them)"
0 Comments