Ticker

6/recent/ticker-posts

সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা বা সাম্প্রদায়িক রোয়েদাদ(১৬ ই আগস্ট ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দ):


সূচনা:- 

   দ্বিতীয় গোলটেবিল বৈঠক(১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দ) কার্যত ব্যর্থ হয় এ কথা বলে যে, "সাম্প্রদায়িক সমস্যা সমাধানে অসামর্থই ভারতের শাসনতন্ত্র রচনার পথে প্রধান বাধা।” এই সমস্যা সমাধানের ভার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী "র‌্যামসে ম্যাকডোনাল্ড” কে দেওয়া হয়।


সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারার উদ্দেশ্য:-

   আইন অমান্য আন্দোলন যখন ভারতের জাতীয় আন্দোলনকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যাচ্ছিল, ব্রিটিশ বিরোধী মানসিকতা যখন তুঙ্গে, ঠিক সেই সময় ভারতের জাতীয় আন্দোলনকে পঙ্গু  করা।


সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা বা সাম্প্রদায়িক রোয়েদাদ(Communal Award):-

    আইন অমান্য আন্দোলনের অবসান ঘটানোর জন্য ব্রিটিশ সরকার দমননীতি সুযোগের পাশাপাশি বিচ্ছিন্নতাবাদী নীতি ও প্রয়োগ করে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী র‌্যামসে ম্যাকডোনাল্ড সংখ্যালঘু সমস্যার সমাধান হিসেবে এক ঘোষণা জারি করেন (১৬ ই আগস্ট ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দ)। এই ঘোষণা "সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা” বা "সাম্প্রদায়িক রোয়েদাদ” নামে পরিচিত।


নীতিসমূহ:-

   ১) পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা:- মুসলমান, ভারতীয় খ্রিস্টান, অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান প্রভৃতি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে পৃথক নির্বাচনের অধিকার দেওয়া হয়।

   ২)  হিন্দু বিভেদ নীতি:- অনুন্নত শ্রেণীর হিন্দুদের পৃথক সম্প্রদায় বলে ঘোষণা করে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়।

   ৩)  তপশিলিদের বিশেষ অধিকার দান:- তপশিলি জাতি নামে পরিচিত অনুন্নত শ্রেণীর হিন্দুদের সরকার পৃথকভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের অধিকার প্রদান করে।


ফলাফল:-

   ১)  গান্ধীজী এই ব্যবস্থাকে মেনে নিতে রাজি হলেন না। হিন্দু সমাজের একাংশ কে ভিন্ন সম্প্রদায়ে হিসেবে পৃথক বলে গণ্য করার প্রতিবাদে তিনি যারবেদা জেলে বন্দী অবস্থায় আমরণ অনশন শুরু করেন।

   ২) গান্ধীজী অনশন এর ফলে সমগ্র শ্রেণীর হিন্দু নেতৃবর্গ নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে পুনা চুক্তি( ২৫ শে সেপ্টেম্বর ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দ) স্বাক্ষর করেন। অনুন্নত হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষে ডঃ বি. আর. আম্বেদকর ও গান্ধীজীর মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

   ৩)  সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা নীতির ফলে তৎকালীন ভারতে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ বৃদ্ধি পায়।


মন্তব্য:- 

   সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা নীতিতে কোন দলই খুশি হয়নি। জাতীয় কংগ্রেস এই নীতির তীব্র বিরোধিতা করে। হিন্দু সমাজ এই বিভাজন নীতির বিরুদ্ধে সরব হন। কেননা এই বাঁটোয়ারা নীতিতে জাতপাতের ভিত্তিতে ভারতকে টুকরো করার চক্রান্ত ছিল।

Post a Comment

0 Comments