প্রতিশ্রুতি:-
সশস্ত্র বিপ্লব পরিচালনার জন্য বিপ্লবীরা ব্রিটেনের শত্রু জার্মানির কাছ থেকে অস্ত্র সাহায্যের প্রতিশ্রুতি পান। বলা হয়, জার্মানি থেকে মাভেরিক, অ্যানি লারসেন ও হেনরি এস নামে তিনটি জাহাজে অস্ত্র পাঠানো হয়েছে। এই অস্ত্র এলে সুন্দরবনের রায়মঙ্গল, উড়িষ্যার বালেশ্বর ও হাতিয়ায়না নামাবার ব্যবস্থা করা হয়। এই অস্ত্র এলে তা পূর্ব বাংলা কোলকাতা ও বালেশ্বরের পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।
অভিযান:-
অস্ত্র সংগ্রহ যাতে সুচারুভাবে সম্পূর্ণ হয়, সেজন্য বাঘাযতীনেরা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে যান। এই দল ১৯১৪ সালের ২৬ শে আগস্ট কলকাতার অস্ত্র ব্যবসায়ী "রডা অ্যান্ড কোম্পানীর" আমদানি করা ৫০টি মাউজার পিস্তল ও ৪৬০০০ রাউন্ড গুলি বিপ্লবীরা কৌশলে লুঠ করে নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি করেন। বিপ্লবীদের একটি দল জার্মানির পাঠানো অস্ত্র সংগ্রহ করতে যদু গোপাল মুখোপাধ্যায় এর নেতৃত্বে সুন্দরবনের রায়মঙ্গলে যায়।
একটি গোষ্ঠী কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম দখলের পরিকল্পনা নেয়। বাঘাযতীন ও তার চার সঙ্গী -চিত্তপ্রিয় রায়চৌধুরী, জ্যোতিষ পাল, নীরেন দাশগুপ্ত ও মনোরঞ্জন সেনগুপ্ত কে সঙ্গে নিয়ে "মাভেরিক" থেকে অস্ত্রশস্ত্র আনার জন্য বালেশ্বরে উপস্থিত হন।
বুড়িবালামের যুদ্ধ:-
কিন্তু ব্রিটিশ পুলিশ গোপনে ওই জাহাজ গুলির ভারতে আসার সংবাদ পেয়ে গেলে ওগুলি আর নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছাতে পারেনি। উপরন্ত কলকাতার পুলিশ কমিশনার "চার্লস অগাস্টাস টেগার্ট ” বাঘাযতীন কে ধরার উদ্দেশ্যে সশস্ত্র পুলিশের এক বিশাল বাহিনী নিয়ে বালেশ্বর পৌঁছান।বা
ঘাযতীন প্রথমে পুলিশের নজর এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে বুড়িবালাম নদীর তীরে ঘাঁটি তৈরি করে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হন। ৯ই সেপ্টেম্বর ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে উভয় পক্ষে ২০ মিনিট ধরে রীতিমত খন্ডযুদ্ধের পর দেখা গেল চিত্তপ্রিয় নিহত এবং যতীন্দ্রনাথ ও জ্যোতিষ মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। পরদিন (১০ই সেপ্টেম্বর,১৯১৫) ভোরে বালেশ্বর হাসপাতালে বীর বিপ্লবী বাঘাযতীন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। জ্যোতিষ সুস্থ হয়ে উঠলে বিচারে ১৪ বছরের কারাদণ্ড হয়। নীরেন ও মনোরঞ্জনের ফাঁসি হয়।
পরে কারারুদ্ধ অবস্থাতেই জ্যোতিষ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। "বালেশ্বর সংগ্রাম" বা "বুড়িবালামের যুদ্ধ" নামে খ্যাত। যতীন্দ্রনাথ ও তাঁর সহ বিপ্লবীদের ওই সংগ্রাম ভারতের বিপ্লবের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় ঘটনা হয়ে আছে।
4 Comments
Valo
ReplyDeleteবুড়িবালাম যুদ্ধে এক বাচ্চা ছেলে শহীদ হয় ইংরেজদের গুলিতে ৷ তার নাম জানালে উপকৃত হয়
ReplyDeleteEkdom faltu
DeleteBe helpful
ReplyDelete